সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬

এইবার যুবলীগ সন্ত্রাসীরা পেটাল মুক্তিযোদ্ধাকে



‘আমি এই বৃদ্ধ বয়সে (৬৫ বছর) একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মার খেতে পারি না। আমাকে দুটো কথা বললে, অপমান করলেই থেমে যেতে পারি। আমিতো ১৬ বছরের যুবক না। কেউ আমার ওপর হাত উঁচু করলে আমি তাকে হাত উঁচু করব। আমাকে একটা ধমক দিলেই তো আমি চমকে যাই। তবু তারা আমাকে নিষ্ঠুরভাবে মারধর করল’- অভিমান আর চাপা ক্ষোভে হাসপাতালের বেডে শুয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার আহম্মেদ মৃধা। অনলাইনে সর্বনিম্ন দরপত্র দিয়ে এলজিইডির একটি কাজ পাওয়াই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তার। সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ই-টেন্ডারে অংশ নেয়ায় নিজ দলের এমপি আবদুল হাইয়ের ক্যাডাররা তাকে নির্মমভাবে মারধর করে ঠেলে দিয়েছে মৃত্যুর পথে। শুধু তিনি নন, তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার ব্যাংকার পুত্রের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ তিনটি হাসপাতালের বেড ঘুরে তারা বর্তমানে মোহাম্মদপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানা গেছে, সম্প্রতি শৈলকুপা উপজেলার রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের কাজে ছয় কোটি টাকার চারটি দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার আহমেদ ১৭ অক্টোবর অনলাইনে দরপত্র জমা দেন। যাচাইবাছাই শেষে ১৮ অক্টোবর বিভিন্ন শর্ত পূরণ করায় ও সর্বনিম্ন দরপত্র হওয়ায় তিনি ছয় কোটি টাকার কাজ পেয়ে যান। কাজটি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এমপি আবদুল হাইয়ের ক্যাডাররা। মারধর ছাড়াও মুঠোফোনে দেয়া হয় হত্যার হুমকি। কাজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে তার ওপর হামলা করে এমপির আশীর্বাদপুষ্ট সশস্ত্র ক্যাডাররা। বাবাকে বাঁচাতে গেলে তার ছেলে গোলাম মুর্শিদকেও পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া হয়।

মুক্তার আহম্মেদ ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও শৈলকুপা উপজেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক। কেবল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেই যুক্ত নন তিনি, এলাকায় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি হিসেবেও বেশ পরিচিত। তার হাত ধরে গড়ে ওঠেছে যমুনা শিকাদার কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি পদ ছাড়াও তিনি রয়েছেন আরও তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একই পদে। ছিলেন আবাইপুর ইউনিয়নের দুই দুইবারের চেয়ারম্যান। এলাকায় অন্য দলের নেতারাও তাকে দেখেন শ্রদ্ধার চোখে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন