শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

বাঘায় ভন্ড পীরের কাণ্ড, থুথু চেটে কান ধরে উঠবসে ক্ষমা

রাজশাহীর বাঘায় ভন্ডপীর দুলাল হোসেন চিকিৎসার নামে দিনমজুর আনেরা বেগম নামের এক নারীকে নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভন্ডপীরের নির্যাতনের শিকার এই নারীকে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে স্থানীয়ভাবে গ্রাম্য শালিসে এই ভন্ড পীরের ৯ হাজার টাকা জরিমানা ও থুথু চেটে কান ধরে উঠবস করিয়ে ক্ষমা দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার আড়ানী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চকসিংগা মহল্লার দুলাল হোসেন ও তার দুই সহযোগী চাঁন মিয়া ও বরকত হোসেন দীর্ঘদিন থেকে পীর পরিচয় দিয়ে এলাকায় ভূয়া কবিরাজী চিকিৎসা দিয়ে আসছিল। আনেরা বেগম (৪৫) গত ২৫ আগস্ট পিঠের ব্যাথা সারাতে ভন্ডপীরের কাছে চিকিৎসা করানোর জন্য যায়। আনেরার কাছে ৭টি ভূত আছে বলে চিকিৎসা শুরু করে।
এক পর্যায়ে ভন্ডপীরের বাড়িতে আনেরা বেগমের দুই হাত ও দুই পা খুঁটির সঙ্গে বেঁধে লোহার রড আগুনে গরম করে ছ্যাঁকা দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সে আহত হয়ে পড়ে। এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে এক সপ্তাহ চিকিৎসা শেষে গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) আড়ানী পৌরসভার মেয়রের কাছে ভন্ডপীরের বিচারের জন্য আবেদন করে।
আবেদনের প্রেক্ষিতে পৌর মেয়র মুক্তার আড়ানী ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক হোসেনকে দায়িত্ব দেন। এই রাতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক হোসেনের সভাপতিত্বে ভন্ডপীরের বাড়িতে একটি গ্রাম্য শালিশী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই শালিসে ভন্ডপীরের ৯ হাজার টাকা জরিমানা, ৫০ বার কানধরে উঠবোস ও নিজের মুখের থুথু মাটিতে ফেলে চেটে নিয়ে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।
গ্রাম্য শালিসে উপস্থিত ছিলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল আবদুস সালাম, সাবেক আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন মন্টু, স্থানীয় ব্যবসায়ী সিদ্দিক মোল্লা, লেবার সরদার শিপন হোসেন, চাল ব্যবসায়ী দিনাজ হোসেন, মোহাম্মদ আলী, ইদ্রিস আলীসহ ৫ শতাধিক মানুষ।
আড়ানী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও গ্রাম্য শালিসের সভাপতি মানিক হোসেন বলেন, ভন্ডপীর দুলাল দীর্ঘদিন থেকে তার বাড়িতে চিকিৎসার নামে অনৈতিক কাজ করে আসছিল। এছাড়া এক অভাবি দিনমজুর আনেরাকে চিকিৎসার নামে নির্যাতনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভন্ডপীর দুলালের এই শাস্তি দেয়া হয়েছে।
আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী ঘটনাটি শিকার করে বলেন, ভন্ডপীরের শাস্তি কম হয়েছে। তাকে আইনের হাতে তুলে দেয়া উচিত ছিল।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তদন্ত হীরেন্দ্রনাথ প্রামানিক জানান, ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে ভন্ডপীরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন